ad728

ডাক্তার ও ঔষধ সংকটে বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত : ২১ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছবির ক্যাপশন: ad728

মাএ ০২ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে ৩১শয্যা বিশিষ্ট ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ডাক্তার ও ঔষধ সংকটে বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা

মো: নাজমুল হোসেন 
পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি :

নামে ও ভবনে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বলবৎ থাকলেও বাস্তবে এখানে মিলছে না তেমন কোন চিকিৎসা সেবা। বর্তমানে মাএ ০২ জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল পরিচালিত হলেও তাদের দেখা মিলছে সপ্তাহে ০৫দিন,বাকি ০২দিন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি   মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) জরুরি বিভাগে বসিয়ে ডাক্তার নাই বলে চিকিৎসা সেবা নামে বৈতরণি পাড় করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০টি ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমান বাস্তব চিত্র ভিন্নরূপ। সপ্তাহের ০৭ দিনের মধ্যে রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার ০২জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতালের ইনডোর,আউটডোর,জরুরী বিভাগ সহ হাসপাতালের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং শুক্রবার ও শনিবার শুধুমাত্র একজন স্যাকমো দিয়ে হাসপাতালের বৈতরণী পার করা হয় যা অফিস পাহারার সমতুল্য। জরুরী অবস্থায় কোন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে তাদেরকে চিকিৎসা সেবা না নিয়েই নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়। 

বিগত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সিএনজির ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে নুরুল ইসলাম নামে একজন রোগী জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে এখানে তখন কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি। স্যাকমো নামধারী একজন ডাক্তার পাওয়া গেলে ও তিনি শুধু শুধু কালক্ষেপণ করে সামান্যতম চিকিৎসা দিতে ও ব্যর্থ হওয়ায় রোগীর স্বজনদের রোশানালে পড়েন। ঐ রোগী পিরোজপুরে নেওয়ার পরে মারা যায়। পরে স্বজনরা এসে স্যাকমোর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে চড়াও হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ বেগ পোহাতে হয়। 

অত্র হাসপাতালের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মিঠুন চন্দ্র বলেন, হাসপাতালে ১০ জন ডাক্তারের মধ্যে ০২জন ডাক্তার বহাল আছেন বাকি ০২জন ডেপুটেশনে কাজ করেন। নার্সের ২৯ টি পদসহ অন্যান্য পদে প্রায় সবাই বহাল থাকলেও শুধুমাত্র ডাক্তার সংকটের কারণে হাসপাতালটির কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে সাবেক সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবেব ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পূর্ণাঙ্গ উপজেলা সহ অত্র হাসপাতাল তৈরি হয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম শুধুমাত্র আউটডোর দিয়ে শুরু হয়।পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার আমলে অত্র উপজেলা সহ এই হাসপাতালটি রোশানলে পরে।সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল এর কাছে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি অত্র হাসপাতালের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড থেকে এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে সাবেক এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর প্রচেষ্টায় ৩১শয্যা বিশিষ্ট অএ হাসপাতালটি নামে মাত্র ইনডোর চালু হয় ও কিছু  যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দেয় যা বর্তমানে অনেকটাই অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। 

বর্তমানে অত্র হাসপাতালের ভর্তি কৃত একাধিক রোগীদের সঙ্গে আলাপকালে জানান,ডাক্তার দেখিয়ে এখানে ভর্তি হলেও পরবর্তীতে তেমন কোন ডাক্তার খোঁজ নিতে আসেন না শুধু মাত্র ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী অধিকাংশই বাইরে থেকে কেনা ঔষধ নার্স এসে সেবন করানোসহ খোঁজখবর নেন। 
  প্রেসক্রিপশনে লেখা দু-একটি সস্তা ঔষধ ছাড়া অধিকাংশ ঔষধই বাইরে থেকে কিনে আনতে হয় ও দু-একটি নরমাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বাকি সবগুলো রিপোর্ট বাইরে থেকে করাতে হয়, যা আমাদের মত গরিব ও অসহায় রোগীদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।আমরা আশা নিয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে আসলেও  পরবর্তীতে আমাদের নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। 

অত্র হাসপাতালের দায়িত্বরত আরএমও ডা. মোঃ রমজান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা.ননী গোপাল রায় তিনি বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছেন। এছাড়া উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য বর্তমানে ০২জন ডাক্তার ছুটিতে আছেন বিধায় এখানে বর্তমানে স্থায়ীভাবে ০২জন ডাক্তার আছেন,তারা সপ্তাহে ০৫দিন এখানে থাকেন বাকি ০২দিন একজন স্যাকমো দায়িত্বে থাকেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অবগত করেছি বর্তমানে ডাক্তার সংকটের কারণে ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন নিয়োগ না হলে এই সংকট পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

আলোচিত শীর্ষ ১০ সংবাদ