ad728

শহীদ জিয়ার পররাষ্ট্রনীতি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছবির ক্যাপশন: ad728

শহীদ জিয়ার পররাষ্ট্রনীতি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
  মো. সহিদুল ইসলাম সুমন
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম এক ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ ও রাষ্ট্রনায়ক। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি এবং তার ছয় বছরের শাসনামলে (১৯৭৬-১৯৮১) বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছিল। তাঁর সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলীর পাশাপাশি তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি স্বনির্ভরতা, সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে তিনি বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে ও এনেছিলেন গতিশীলতা। তার অনন্য অর্জনের মধ্যে পররাষ্ট্রনীতি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
 
 শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পররাষ্ট্রনীতির প্রথম এবং প্রধান দিক ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট ও আন্তর্জাতিকভাবে এক বিচ্ছিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছিল। জিয়া তাঁর শাসনামলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী, স্বাধীন এবং সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন।এবং জিয়া পররাষ্ট্রনীতিতে নিরপেক্ষতার পথে হাঁটতে পছন্দ করতেন। তিনি বিদেশী শক্তির প্রভাবে দেশ পরিচালনা না করে, বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তার এই নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি ‘ব্লক-নিরপেক্ষতা’ বা ‘Non-alignment’ তত্ত্বের অনুসরণ ছিল, যা ছিল পূর্ববর্তী শাসকদের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। জিয়াউর রহমান জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করেন এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেন। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেন, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য উন্নত দেশের সাথে। পাশাপাশি, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনসহ পূর্ব ব্লকের দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন। পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন, জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বলয় থেকে বেরিয়ে আমেরিকা ও চীনের সাথে সুসর্ম্পক তৈরি হয়।এক্ষেত্রে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সাথে স্থাপিত সম্পর্ক অনেকটা অর্থনৈতিক হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সাথে স্থাপিত সম্পর্কে সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক ইস্যুগুলোও প্রাসঙ্গিক ছিল। বিশেষ করে চীনের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করার মাধ্যমে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পূণর্গঠনের কাজ অনেকটা তরান্বিত করেছিলেন। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্রাগারের দিকে তাকালে সেই সত্যই প্রতিফলিত হয়। সামরিক পূনর্গঠনের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উন্নত কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে জিয়া রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থা বিমানের আধুনিকীকরণও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
 তিনি চীন, আমেরিকা এবং সৌদি আরবের সাথে সর্ম্পক গড়ে তুলেন। এ তিনটি দেশের সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্বের বিরোধিতা করেছিল। ১৯৭৫ সালে আগস্ট পর্ষন্ত সৌদি আরব ও চীনের কাছে থেকে বাংলাদেশের স্বীকৃতি ছিল না। প্রেসিডেন্ট জিয়া সৌদি আরব ও চীনের সাথে দ্রুত সর্ম্পক উন্নীত করেন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের ভারতের সাথে সম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ও সংকটের মুখোমুখি হয়।জিয়া ভারতকে প্রধান প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচনা করে, তার শাসনামলে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করেন। তিনি ভারতের সাথে সম্পর্ককে সামরিক নিরাপত্তা, বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন। তবে, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি ভারতকে অনেক সময় সতর্ক করেন, যাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন না হয়। ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক, রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক এবং আর্থ-সামাজিক কারণ এবং তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৭৭ সালের মার্চ মাসে মোরারজি দেশাইযের নেতৃত্বে জনতা দল ভারতে ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নতি হয়। জিয়াউর রহমান সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দমনে দেশাই সরকারের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পান। ফারাক্কা ব্যারাজ ইস্যুতে মোরারজি দেশাই বাংলাদেশের সমস্যা বুঝতে পেরেছিলেন। বিশেষজ্ঞ এবং মন্ত্রী পর্যায়ের ধারাবাহিক বৈঠকের পর ফারাক্কায় গঙ্গার জল বণ্টনের গ্যারান্টি ক্লজ সম্বলিত একটি পাঁচ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ডিসেম্বর, ১৯৭৭-এ। ১৯৭৯, বাংলাদেশের জন্য গঙ্গা থেকে সেচের পানি বরাদ্দের জন্য একটি যৌথ নদী কমিশন গঠনে সম্মত হয়।
তার শাসন আমলে তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরান, লিবিয়া ও সৌদি আরব ছাড়া অনেক আরব দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে এগিয়ে এসেছিল।শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের আরব দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। তিনি আরব দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সম্পর্কের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশ তখনও আরব বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হতো, এবং জিয়াউর রহমানের কূটনীতির ফলে দেশটি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।বিশেষ করে, সৌদি আরব, কুয়েত, এবং অন্যান্য গালফ দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। এসব দেশের সাথে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, ঋণ সুবিধা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে সমন্বয় ঘটে। এই সম্পর্কগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা আজ ও রেখে চলছে।

জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথম দিকে, পাকিস্তান বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে অনীহা ছিল, তবে জিয়া পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করেন। তিনি পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান মজবুত করার লক্ষ্য কাজ করেছিলেন।এই সময়ে পাকিস্তানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখা হয়, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে। এছাড়াও, পাকিস্তানের সাথে সামরিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কও নতুন মাত্রা পেয়েছিল।

জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে মুসলিম বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সর্ম্পক ঘনিষ্ঠ হয়। বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্বের কাছাকাছি এসেছে যা বাংলাদেশ এবং তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে নতুন ভাবে দেখতে শুরু করে। মুসলিম দেশগুলোর সাথে ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে সর্ম্পক জোরদার করা জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে একটি অনুচ্ছেদ যোগ করেন জিয়াউর রহমান। চীন ও আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের একটি ভালো কাজের সর্ম্পক গড়ে উঠেছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বাংলাদেশের কাছাকাছি এসেছিল। তিনি বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং দেশের বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পকের উন্নয়নের জন্য অনেক দেশ সফর করেন। তার এই বিদেশ সফর অনেক সাফল্যে সমৃদ্ধ ছিল। বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে নিরাপত্তা পরিষদে তার একটি অস্থায়ী আসনে নির্বাচিত হয় এবং জাতিসংঘের সদস্যদের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াই দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণার সূচনা করেছিলেন এবং তার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জোট সার্ক গঠনের ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সার্ক (SAARC) বা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৮০ সালে সার্ক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা তিনি দিয়েছিলেন এবং এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা, শান্তি ও উন্নয়নকে প্রচার করার লক্ষ্যে তিনি কাজ করেছিলেন। জিয়াউর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন যে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার বদলে সহযোগিতা স্থাপিত হলে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে যার ফলে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলো উপকৃত হবে। এই লক্ষ্যে তিনি সার্কের রূপরেখা রচনা করেন যা পরে ১৯৮৫ সালে বান্তবে রূপ নেয়। 
সার্ক মূলত প্রতিষ্ঠা করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা করার লক্ষ্যে। এটি অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়নের যৌথ আত্মনির্ভরশীলতার জন্য নিবেদিত ছিল। যা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদানের কারনে। 
সার্কের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সমূহ হল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান এবং ২০০৭ সালে আফগানিস্তান সার্ককের সদস্য পদ লাভ করে।

আজকে দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা রোহিঙ্গা সমস্যা, ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়া ক্ষমতায়, মিয়ানমারের সামরিক শাসক নে উইন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নাগা মিন অপারেশন পরিচালনা করে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের কারনে ২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের দিকে চলে আসে,
জিয়া তাদেরকে আশ্রয় দিলেন, একই সাথে দুইটা কাজ করলেন,দ্রুত গতিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও চীনকে যুক্ত করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করলেন।
দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়কেন্দ্রকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রূপ দিলেন, মিয়ানমারকে বললেন, আইদার ইউ গেট ইট ব্যাক, অর ইউ ফেইস।

নে উইনও যেহেতু সামরিক শাসক ছিলেন, তিনি বুঝে গেলেন এই হুমকীর মর্মার্থ, রোহিঙ্গাদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণও অস্ত্র দিয়ে মিয়ানমারে পাঠানো হবে।১৯৭৮ সালের ৯ই জুলাই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি হয়, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হিন্থা প্রজেক্ট গ্রহণ করে, এবং রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে প্রত্যাবাসিত হয়,১৯৯৪ সালে খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায়, তখনো ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে, একই সাথে মিয়ানমারকে বলেন, যদি তোমরা ফেরত না নাও, আমরা অন্য ব্যবস্থা নিবো,খালেদা জিয়ার সাথে যেহেতু চীন, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক ছিলো, তাই আন্তর্জাতিক চাপ ও খালেদা জিয়ার হুমকী দুটোর কাছেই মাথানত করে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয় মিয়ানমার।

জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণে গুরুত্ব দেন। তার মতে, দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য শক্তিশালী সামরিক বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে সামরিক দিক থেকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তার সময় থেকেই বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে আন্তর্জাতিক মিশনগুলোতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অংশগ্রহণের সূচনা জিয়ার শাসনামলেই। জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ থেকে সেনা পাঠানো শুরু হয়, যা দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করে ও সামরিক শক্তির প্রমাণ দেয়।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি দেশের জাতীয় স্বার্থের প্রতিরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, একটি দেশ যতই ছোট হোক না কেন, তার স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানানো অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ছিল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এবং বিশ্ব শান্তির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ।এছাড়া, জিয়া আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের ভূমিকা শক্তিশালী করার জন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। 
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ঋণের পরিপ্রেক্ষিতে, জিয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা যেমন বিশ্ব ব্যাংক, IMF, ADB সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার চেষ্টা করেন। তিনি বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ হ্রাস, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সহায়তা এবং বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি উপর্যুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে আগ্রহী ছিলেন।

৩০ শে মে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী, শাহাদাৎ বার্ষিকীতে শহীদ জিয়ার চেতনা, শহীদ জিয়ার অবস্থান আমাদের সকলকে এমন শক্তিতে জাগিয়ে তুলুক যে, আমরা বলতে পারি, আমরা সকলে আধুনিক, অগ্রসর, স্বাধীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নাগরিক। স্বাগতঃ বঙ্গে মুক্তিকাম। সুপ্তবঙ্গে জাগুক আবার লুপ্ত স্বাধীন সপ্তগ্রাম- এই আহবান জানিয়ে কবি নজরুল বলেছিলেন, তোমরা বন্ধু, কেহ অগ্রজ, অনুজ সোদর সম। প্রার্থনা করি ভাঙ্গিয়া দিও না মিলনের সেতু মম। এই সেতু আমি বাঁধিব, আমার সারাজীবনের সাধ। বন্ধুরা এস, ভেঙ্গে দিব যত বিদেশীর বাধা বাঁধ (বন্ধুরা ফিরে এসো)। আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান ঘোষক অমর দেশনায়ক শহীদ জিয়ার স্মৃতির প্রতি অনন্ত শ্রদ্ধা।

লেখক :অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট।