চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্র সমিতি (কিউয়েসা) কর্তৃক আয়োজিত এক সেমিনার
নিজস্ব প্রতিবেদক
-
প্রকাশিত : ১১ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্র সমিতি (কিউয়েসা) কর্তৃক আয়োজিত অর্থনীতির অভিবাসন ও দক্ষ জনশক্তি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ শীর্ষক এক সেমিনার। মোঃ জসিম উদ্দিন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো:
১০/০৫/২০২৫ তারিখ শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্রসমিতি (কিউয়েসা) কর্তৃক আয়োজিত "অর্থনীতির অভিবাসন ও দক্ষ জনশক্তিঃ বাংলাদেশ প্রসঙ্গ” শীর্ষক এক সেমিনারে উপরোক্ত বিষয়সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কিউয়েসা এর সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোহম্মদ আবদুল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইমিগ্রেশন বিষয়ক আইনজীবি ও কিউয়েসা এর আজীবন সদস্য ব্যারিস্টার মির্জা জিল্লুর রহমান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও কিউয়েসা এর আজীবন সদস্য জনাব আজিজুন নাহার শ্যামলী। সেমিনারে সম্মানিত অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-
জনাব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মূখ্য সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা
এর কার্যালয় ও আজীবন সদস্য, কিউয়েসা;
জনাব মোঃ মুসলিম চৌধুরী, চেয়ারম্যান, সোনালী ব্যাংক ও সাবেক অর্থ সচিব;
প্রফেসর ড. রুমানা হক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
জনাব মাহমুদুর রহমান মান্না, রাজনীতিক ও আজীবন সদস্য, কিউয়েসা,
প্রফেসর ড.এ.কে.এনামুল হক, মহাপরিচালক, বিআইডিস ও আজীবন সদস্য, কিউয়েসা,
প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল, ডিন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,
জনাব মোঃ আসাদুজ্জামান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও
আজীবন সদস্য, কিউয়েসা;
ড.মোঃ সবুর, চেয়ারম্যান, আদ-দীন ফাউন্ডেশন,
ড.মোঃ ফয়সাল, সভাপতি, বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ্ এসোসিয়েশন,
জনাব গোলাম মোস্তফা, চেয়ারম্যান, প্রান্তিক ট্র্যাভেলস লিমিটেড,
জনাব জুলিয়ান ওয়েবার, সিইও, সিকিউর লিংক সার্ভিস বাংলাদেশ লিমিটেড,
ড. মোঃ মুজাফফর আহমদ ও সহ-সভাপতি,কিউয়েসা নির্বাহী পরিষদ,
আগা আজিজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যাংকার ও সাধারন সম্পাদক, কিউয়েসা নির্বাহী পরিষদ,
জনাব খোকন দাস, সম্পাদক, প্রবাসন ও আজীবন সদস্য,কিউয়েসা,প্রমূখ।
এছাড়াও কিউয়েসা এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আজীবন সদস্য সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচকগণের বক্তব্য সূত্রে দেখা যায় যে- গত বছর বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ছিল ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আন্তর্জার্তিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ হতে দক্ষ শ্রমিক সরববাহ করা সম্ভব হলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রবাসী আয় ২৫% বৃদ্ধি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে সরকারী/বেসরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন দেশের শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলার জন্য বিষয় ভিত্তিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানের সংগে সমঝোতা স্মারক প্রণয়ন, বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে সরকারী বিভিন্ন সেবাকে আরও সহজ করা, অভিবাসন ব্যয় কমানো, তথ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে বাংলাদেশী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর জন্য একটি বড় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে,যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আয় প্রবাহে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখবে।
(কিউয়েসার)নেতারা বলেন,
বাংলাদেশ একটি দীর্ঘ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস এর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মানের নতুন যাত্রা শুরু করেছে। অগ্রসরায়মান ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক কাঠামো বিনির্মানে বাংলাদেশকে তার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (Demographic Dividend) সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। তাই জনবলকে বাজার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অপরিহার্য। বাংলাদেশের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছে। বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের শ্রম বাজারে বাংলাদেশের বড়মাত্রার অংশগ্রহণ থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের শ্রম বাজারে বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাংখিত মাত্রার অংশগ্রহণ নেই।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক রপ্তানী আয় ও প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো আয় (রেমিডেন্স)। সাম্প্রতিক বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে- আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশ- জার্মানী, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, রোমানীয়া, পর্তুগাল-এ নার্সিং, আইটি, নির্মাণ শিল্প, প্রকৌশল, কৃষি,পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, বৃদ্ধসেবা ইত্যাদি খাত ও পেশায় দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন খাত ও পেশায় জার্মানীতে ২০ লক্ষ, পোল্যান্ডে আড়াই লক্ষ, রোমানীয়ায় দেড় লক্ষ, নেদারল্যান্ডে তিন লক্ষ এবং পর্তুগালে এক লক্ষ বিশ হাজার শ্রমিকের চাহিদা ছিল। ভারত, ফিলিপাইন, নেপাল হতে বর্তমানে প্রচুর শ্রমিক ইউরোপে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বাংলাদেশ এই শ্রমবাজারের সুবিধা গ্রহনে ব্যর্থ হবে এবং সম্ভাবনাময় প্রবাসী আয় লাভে সফল হবে না। তাই আন্তর্জার্তিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য সরকারী/বেসরকারী পর্যায় অধিক মাত্রায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ প্রয়োজন। একই সঙ্গে বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে সরকারী বিভিন্ন সেবাকে আরও সহজ করা এবং তথ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :